মৌমাছি নিয়ে কুরআন থেকে গবেষণা।

মৌমাছি নিয়ে কুরআন থেকে গবেষণা।

 মৌমাছি নিয়ে কুরআন থেকে গবেষণা।

মৌমাছি নিয়ে কুরআন থেকে গবেষণা।
মৌমাছি নিয়ে কুরআন থেকে গবেষণা।

    কুরআন, বিজ্ঞান ও মৌমাছি।

    মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের নাম হচ্ছে  আল-কুরআন। পবিত্র আল-কুরআন মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের নবি হযরত মুহাম্মদ (সা) এর উপর নাজিল করেন। পবিত্র আল-কুরআনকে ও এর অনেক আয়াতকে আজ অনেক নাস্তিক বিশ্বাস করেন না। বলেন কুরআন নাকি অবৈজ্ঞানিক। আসলে তারা মনে হয় বিজ্ঞান বা কুরআন কোনটা সম্পর্কেই ভালো ও বিস্তারিত জানেন না। কারণ এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান আল-কুরআনের একটা অক্ষরও ভুল ধরতে পারেনি। বরং কুরআনে উল্লেখিত বিজ্ঞানগুলোর সবগুলো প্রমাণ করতে না পারলেও যেগুলো পেরেছে সেগুলো মাথা পেতে নিয়েছে। কিন্তু কখনো কোন ভুল ধরতে পারেনি। ভবিষ্যতে মানুষ কুরআনের সকল বৈজ্ঞানিক আয়াতগুলো প্রমাণ করবে ইনশাআল্লহ। বর্তমান বিজ্ঞান আরো উন্নত হচ্ছে। আবিষ্কার হচ্ছে নতুন নতুন অনেক কিছু। সেই সাথে বাড়ছে কুরআনে বিজ্ঞানের উপস্থিতির প্রমাণ। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি বৈজ্ঞানিক আয়াত বিজ্ঞান প্রমাণ করে ফেলেছে কিন্তু কোনটা ভুল প্রমাণ করতে পারেনি। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে পবিত্র আল-কুরআনে সকলকিছু বলে দিয়েছেন। কীভাবে পৃথিবীতে জীবণযাপন করতে হবে, কীভাবে চললে জান্নাত পাবো, কীভাবে চললে জাহান্নাম এর শাস্তি ভোগ করতে হবে, কীভাবে চললে পৃথিবীতে শান্তিতে বসবাস করা যাবে ইত্যাদি। শুধু তাই নয় আমাদের পবিত্র আল-কুরআনে উল্লেখ আছে বিজ্ঞানসম্পর্কিত অনেক আলোচনা। যা বর্তমান বিজ্ঞান স্বীকার করে। যা থেকে বোঝা যায় ইসলাম একটি সত্য ও শ্বাস্যত ধর্ম। মহাগ্রন্থ পবিত্র আল-কুরআনে যে সকল বৈজ্ঞানিক আয়াতের প্রমাণ হয়েছে তা বলে বা লিখে শেষ করা যাবে না। আমরা এই সাইটে আস্তে আস্তে অনেক বৈজ্ঞানিক আয়াত সম্পর্কে আলোচনা করবো ও জানবো। তবে আজ আমরা জানবো, মৌমাছি সম্পর্কে কুরআন থেকে গবেষণা।
    মৌমাছি, এই প্রাণীটিকে আমরা সকলেই চিনি। মৌমাছি থেকে আমরা মধু সংগ্রহ করি। মহাগ্রন্থ পবিত্র আল-কুরআনে মৌমাছি সম্পর্কিত ও মৌমাছি নামে একটি সূরা নাজিল হয়েছে। সে সূরার নাম "আন-নাহাল"। মৌমাছি নিয়ে অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয়েছে। মৌমাছি নিয়ে গবেষণা করে একজন বিজ্ঞানী চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পর্যন্ত পেয়েছেন। এখন আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো,
    আরো পড়ুনঃ

    উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের " Henry The Fourth" এর আলোকে মৌমাছিঃ

    আমরা সকলে হয়তো বিখ্যাত লেখক উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের নাম শুনেছি। তার একটা নাটক আছে। যার নাম " Henry The Fourth"। ধারণা করা হয় তিনি এই নাটকটি লিখেছিলেন ১৫৯৭ সালে এবং তা প্রকাশিত হয় ১৬০৫ সালে। তিনি তার এই নাটকটিতে মৌমাছি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি এই নাটকটিতে দেখিয়েছেন, পুরুষ মৌমাছিদের একজন রাজা থাকে। আর সেই রাজাটা নির্ধারিত হয় পুরুষ মৌমাছিদের ভেতর থেকেই, অনেকটা নির্বাচিত প্রতিনিধির মতো। সেখানে বলা হয়েছে, রাজা ব্যতীত সকল মৌমাছি হলো সৈনিক মৌমাছি। আর সৈনিক মৌমাছিদের কাজ হলো, মৌচাক নির্মাণ করা ও মধু সংগ্রহ করা। তারা রাজার নির্দেশমতো প্রতিদিনের কাজ সম্পন্ন করে ও রাজার নিকট তার জবাবদিহি করে। এটাকে বলা যেতে পারে, মধ্য ও প্রাচীনযুগীয় রাজা-বাদশাহদের শাসনের মতো।

    এখন উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের  " Henry The Fourth" থেকে বোঝা যায় ঃ

    "মৌমাছি দুই প্রকার। স্ত্রী মৌমাছি ও পুরুষ মৌমাছি। স্ত্রী মৌমাছি সন্তান উৎপাদন করে ও পুরুষ মৌমাছি বাকি সকল কাজ করে।"

    মৌমাছি নিয়ে বিজ্ঞানী কার্ল ভন ফ্রিসছ  Karl Von Frisch এর গবেষণাঃ

    আমরা জানি, অস্ট্রিয়ান বিজ্ঞানী Karl Von Frisch ১৯৭৩ সালে  Physiology of Medicine বিষয়ে গবেষোণার ফলে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। তার গবেষণার মূল বিষয় ছিল, "মৌমাছির জীবণচক্র"। তিনি তার এই গবেষণায় উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের সময়ের মানুষের মৌমাছি সম্পর্কে ভুল ধারণা প্রমাণ করেন। তিনি দেখিয়েছেন মৌমাছি দুই প্রকার নয় বরং মৌমাছি তিন প্রকার।
    একটা হলো পুরুষ মৌমাছি, দ্বিতীয় হলো স্ত্রী মৌমাছি, যাদেরকে ইংরেজিতে বলা হয় "Queen Bee"
    এরা শুধুমাত্র সন্তান উৎপাদন ছাড়া অন্য কোন কাজ করে না। আর এই দুই প্রকার মৌমাছি ছাড়াও আরো এক প্রকারের মৌমাছি আছে, এরা লিঙ্গভেদে স্ত্রী মৌমাছি, তবে তারা একটু ভিন্ন। কেননা তারা সন্তানদানে অক্ষম
    আমরা মনে করি, পুরুষ মৌমাছিরাই মৌচাক নির্মাণ থেকে শুরু করে সকল কাজ করে, কিন্তু আমাদের এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। মজার ব্যপার হলো, পুরুষ মৌমাছির শুধুমাত্র একটিই কাজ এবং তা হলো স্ত্রী মৌমাছির সাথে যৌন জনন সম্পন্নের মাধ্যমে প্রজনন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করা। অর্থাৎ জনন ক্রিয়ার অংশ নেওয়া ছাড়া পুরুষ মৌমাছির কোন কাজ নেই।
    যদি এমন হয় , তবে বাকী কাজ কারা করে?
    বাকী সকল কাজ করে থাকে তৃতীয় প্রকারের মৌমাছি, যাদেরকে ইংরেজিতে বলা হয় Worker Bee বা কর্মী মৌমাছি।
    শুধু তাই নয় বিজ্ঞানী Karl Von Frisch আরও প্রমাণ করেছেন যে, এসকল কর্মী মৌমাছিরা যখন ফুল থেকে মধু সংগ্রহে বের হয়, তখন তারা এক অদ্ভদ প্রকারের কাজ করে। সেটা হলো কোন একটি মৌমাছি একটি মধু সংগ্রহের জন্য উদ্যান পেলে তা অন্য মৌমাছিদেরকে বলে দেয় এবং বাকী সকল মৌমাছিরা সেখান থেকে মধু সংগ্রহ করে। জায়গা চিনতে কোন হেরফের হয় না। আর Karl Von Frisch এই অদ্ভদ জিনিসটার নাম দিয়েছেন, "Waggle Dance" 
    এই পুরো জিনিসটার উপর গবেষণা করে বিজ্ঞানী Karl Von Frisch ১৯৭৩ সালে  Physiology of Medicine বিষয়ের উপর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। 

    কুরআন কী বলে?

    মজার ব্যপার হলো যে, ১৯৭৩ সালে বিজ্ঞান এটা প্রমান করলেও এর প্রায় ১৪০০ শত বছর আগে পবিত্র আল-কুরআনে আল্লাহ তায়ালা এটি বলে দিয়েছেন। কুরআন নাজিল হয়েছে আরবি ভাষায়। আর আমাদেরকে বিষয়টি ধরতে হলে আরবি ব্যকরণ বুঝতে হবে। 
    ব্যকরণের ক্ষেত্রে একটি মজার ব্যপার হলো যে, আমাদের বাংলা ভাষায় লিঙ্গের পরিবর্তন হলেও ক্রিয়া বা Verb একই থাকে। 
    যেমনঃ 
    He plays cricket.
    She plays cricket.
    এখানে  Plays অর্থাৎ ক্রিয়ার কোন পরিবর্তন ঘটেনি। কিন্তু আরবি ভাষায় তা ঘটে থাকে।
    পবিত্র আল-কুরআনের সূরা নাহালের ৬৮ নং আয়াতে বলা হয়েছেঃ"ওয়া আওহা- রাব্বুকা ইলান নাহলি আনিত্তাখিযীমিনালজিবা-লি বুইঊতাও ওয়া মিনাশশাজারি ওয়া মিম্মা-ইয়া‘রিশূন।"
    তোমার রাব্ব মৌমাছির অন্তরে ইঙ্গিত দ্বারা নির্দেশ দিয়েছেনঃ তুমি গৃহ নির্মাণ কর পাহাড়, বৃক্ষ এবং মানুষ যে গৃহ নির্মাণ করে তাতে। (সূরা নাহালের ৬৮ নং আয়াত)।

    এখানে সন্তান জন্মদানের কথা নয় বরং মৌচাক নির্মাণের কথা বলা হচ্ছে। বিজ্ঞানী Karl Von Frisch এর কথা অনুসারে, মৌচাক নির্মাণের কাজ করে স্ত্রী কর্মী মৌমাছি। এখন কুরআনে যা উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে কোন মৌমাছিকে উল্লেখ করা হয়েছে, পুরুষ নাকি স্ত্রী মৌমাছিকে? আরবি ব্যকরণ অনুসারে পুরুষ মৌমাছির ক্ষত্রে ব্যবহার করা হয় "ইত্তাখিজ" এবং স্ত্রী মৌমাছির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় "ইত্তাখিজি"। মজার ব্যপার হলো যে, পবিত্র আল-কুরআনে একে ইত্তাখিজি বলা হয়ছে। অর্থাৎ স্ত্রী মৌমাছিকেই নির্দেশ করা হচ্ছে। 

    এখন প্রশ্ন হলো, ১৪০০ বছর আগে কী কোন মাইক্রোস্কোপ যন্ত্র ছিলো যে দিয়ে তা গবেষণা করা যাবে?

    এ থেকেই বোঝা যায়, পবিত্র আল-কুরআন সত্য ও শ্বাস্যত।

    চোষণ বা পান করার ক্ষেত্রে আরবিতে পান করার জন্য ব্যবহৃত হয়, "কুল" আর স্ত্রীলিঙ্গের জন্য ব্যবহার করা হয় "কুলি" ।পবিত্র আল-কুরআনে "কুলি" করা হয়েছে। অর্থাৎ স্ত্রী মৌমাছিকে নির্দেশ করা হয়েছে। আবার চলার জন্য পুংলিঙ্গের জন্য "উসলুক" এবং স্ত্রীলিঙ্গের জন্য ব্যবহৃত হয় "উসলুকি"। কুরআনেও তা ব্যবহার করা হয়েছে।

    আল্লাহ তায়ালা কুরআনে মৌমাছিদেরকে সরল-সহজ পথে চলতে বলেছেন। মৌমাছির তো আল্লাহর কাছে ভালো মন্দের জবাবদিহিতা করতে হবে না। তবে কেন আল্লাহ তাদের সরল-সহজ পথে চলতে বলেছেন?

     বিজ্ঞানী Karl Von Frisch এর মতে, তাদেরকে মধ্যে কোন মৌমাছি কোন উদ্যানের সন্ধান পেলে অন্যদেরকে তা জানায় ও অন্যান্য মৌমাছিরা ঠিক সেই পথে যায় ও এর কোন হেরফের করে না ও মধু সংগ্রহ করে। বিজ্ঞানী Karl Von Frisch এর নাম দিয়েছলেন, "Waggle Dance" 

    কুরআনেও ঠিক তা নির্দেশ করা হয়েছে। অর্থাৎ কুরআন ও ইসলাম সম্পূর্ণ সত্য ও বৈজ্ঞানিক। নাস্তিকরা ইসলাম বা বিজ্ঞান কোনটি সম্পর্কেই বিশেষ গবেষণা ও ভুল ধারণা থাকার কারণে একটা ঘোর অন্ধকারের মধ্য থাকেন।

    আমরা সকলে ইসলাম ও কুরআনকে মানবো। কুরআন সম্পর্কে বিস্তারির জ্ঞান আহরণ করে সুপথগামী হবো ইনশাআল্লাহ।

    লেখকঃ মোহাম্মদ সিহাব উদ্দিন মাহি।

    তথ্য সংগ্রহঃ [ ইন্টারনেট, প্যারাডক্সিকাল সাজিদ, আরিফ আজাদ]

    ধন্যবাদ।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    3 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
    • Comment
      Comment May 4, 2021 at 12:31 PM

      Very good post

    • Comment
      Comment May 5, 2021 at 7:22 PM

      Thanks for the post❤️❤️❤️

      • Md. Shihab Uddin Mahi
        Md. Shihab Uddin Mahi May 5, 2021 at 7:26 PM

        You are most welcome 🥰

    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন
    comment url