মহাকাশে রকেট কিভাবে যায়?

মহাকাশে রকেট কিভাবে যায়?

মহাকাশ সম্পর্কে সকলেরই কিছু না কিছু জানা আছে। মহাকাশে আমরা বিভিন্ন সময় স্যাটেলাইট পাঠাই। আবার বিজ্ঞানীরা গবেষণার জন্য যায় মহাকাশে। মহাকাশে যাওয়ার একমাত্র বাহন হচ্ছে রকেট। আমরা সকলেই এটা জানি। কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ও অনেকেই হয়তো জানে না এই রকেট কীভাবে মহাকশে যায় আবার বা কীভাবে পৃথিবীতে ফিরে আসে। এসকল সম্পর্কে ও রকেট নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
মহাকাশে রকেট কিভাবে যায়?
মহাকাশে রকেট কিভাবে যায়?

    রকেটঃ

    রকেট হচ্ছে এক বিশেষ প্রকারের যান যেখানে রাসায়নিক শক্তির দহনের মাধ্যমে উৎপাদিত পদার্থগুলোর 
    শক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রবল বেগে নর্গমন পথে বের করে দেওয়া হয়। যার ফলে ঘাতবল সৃষ্টি হয়। ঘাতবল হচ্ছে এমন একটা বল যা হঠাৎ করে বেশি বেগে বা মাত্রায় ঘটে। যেমনঃ বেত দিয়ে শরীরে আঘাত। ঠিক একইভাবে রকেটে প্রচুর পরিমাণে ঘাতবল সৃষ্টি হওয়ার কারণে তা পৃথিবীর মহাকর্ষ বলের বিপরীতে প্রবল বেগে অগ্রসর হয়। এখানে মূলত নিউটনের তৃতীয় সূত্রের প্রয়োগ ঘটানো হয়। আমরা যারা বিজ্ঞানের ছাত্র তাদের সকলেই জানি নিউটনের তৃতীয় সূত্রটি হলোঃ
    " যখন কোন একটি বস্তু অন্য আরেকটি বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে তখন সেই বস্তুটিও প্রথম বস্তুর উপর বিপরীত দিক থেকে ঠিক সমান বল প্রয়োগ করে।"
    যেমনঃ আমরা যখন হাঁটি।

    অর্থাৎ প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।

    এখানে রকেটের ইঞ্জিন প্রতক্রিয়া ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করে। এই ইঞ্জিনের জ্বলানি বা প্রচালক কঠিন, তরল, গ্যাসীয় বা বিভিন্ন রকম হতে পারে।

    সর্বপ্রথম রকেট আবিষ্কার করেন কে?

    আমরা তো রকেট সম্পর্কিত আলোচনা করছি। তো চলো জেনে নেই, এই রকেট সর্বপ্রথম কে আবিষ্কার করেন। তরল জ্বলানি ব্যবহার উপযোগী রকেট সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন জার্মানির একজন অত্যন্ত স্বরণীয় ও মেধাবী বিজ্ঞানী বার্নার ফন ব্রাউন। কিন্তু তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি থেকে আমেরিকায় স্থানান্ত্রিত হয়ে মহাকাশ প্রকল্পে কাজ করেন। তিনি সর্বপ্রথম চাঁদে মানুষ পাঠাতে সহায়তা করেন। তিনি সর্বপ্রথম রকেট আবিষ্কার ও এটি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার কারণে তাকে রকেট বিজ্ঞান বা Rocket Science এর জনক বলা হয়।
    আরো পড়ুনঃ

    রকেটের ইঞ্জিন

    রজেটের ইঞ্জিন আমাদের সাধারণ যানবাহনের ইঞ্জিনের মতো নয়। আমরা যে যানবাহনগুলো ব্যবহার করি সেগুলোর ইঞ্জিনগুলো জ্বলানিগুলোকে উত্তপ্ত করে তা পরে কিছু পিস্টনকে সজোরে ধাক্কা প্রদান করে। তারপরবর্তিতে সেগুলো ঢিলে  হয়ে যায়। আর তাই আমরা কোন চাকা বা ইঞ্জিন ঘোরানোর সময় পর্যায়বৃত্ত শক্তি ব্যবহার করি। কোন একটি উৎস হতে একই দিকে, একইভাবে পর্যায়ক্রমে যে গতির সৃষ্টি হয় তা হলো পর্যায়বৃত্ত গতি। চাকার মধ্যে আমরা এই পর্যায়বৃত্ত গতিকে কাজে লাগিয়ে মাইলের পর মাইল দূরত্ব অতিক্রম করি।
    কিন্তু রকেটের ক্ষেত্রে ব্যপারটা পুরোটাই ভিন্ন। রকেটে ব্যবহার্য ইঞ্জিন হলো রি-একশন ইঞ্জিন। অর্থাৎ জ্বলানিগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে পেছনের দিক থেকে বেরিয়ে আসে ও নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী বিপরীত দিক থেকে বল প্রয়োগ করে। যার ফলে রকেট উপরের দিকে উঠতে থাকে।

    রকেট সম্পর্কিত আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ

    ১) রকেট দুইটি অংশ নিয়ে গঠিত।
    ২) একটি স্পেস ক্রাফট। এর কাজ হলো রকেটে যাত্রী পরিবহণ করা। এটি সাধারণত একটি উড়োজাহাজের মতো হয়ে থাকে। এখানে থাকা, খাওয়া, ঘুম ও টয়লেটের ব্যবস্থা থাকে। এর সামনে কন্ট্রোল্মরু থাকে।
    ৩) অন্যটি রকেটের ইঞ্জিন। এর সাথে স্পেস ক্রাফট যুক্ত অবস্থায় থাকে।

    রকেট মহাকাশে যায় কীভাবে?

    আমরা সাধারণত রকেটের বাইরের অংশটুকু দেখতে পাই। কিন্তু এর ভেতরে থাকে জ্বলানি। এই জ্বলানি রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বড় বিস্ফোরন ঘটায়। যা আমরা দেখতে পাই। নিউটনের তৃতীয় সূত্রানুসারে "প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে" অনুযায়ী এটি উপরের দিকে উঠে যায়। আমরা জানি, কোন বস্তুকে 11.2km/s বেগে নিক্ষেপ করলে তা মধ্যাকর্ষণ শক্তি ছেদ করে মহাকাশে চলে যাবে। আর রকেটে ঠিক সেই কাজটিই করা হয়। তাই বলা যায়, নিউটনের তৃতীয় সূত্রানুসারে রকেটকে মহাকাশে প্রেরণ করা হয়।

    রকেট কী আদৌ পৃথিবীতে ফিরে আসে?

    আমরা তো জানি ও দেখি রকেট সরাসরি উপরের দিকে যায়। সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকেই বোঝা যায়, রকেট পৃথিবীতে ফিরে আসে না। এখন প্রশ্ন হলো, রকেট যদি ফিরে না আসে তবে বিজ্ঞানীরা বা মহাকাশচারীরা কীভাবে পৃথিবীতে ফিরে আসে?
    মজার ব্যপার হলো যে, রকেট যখন মহাকাশে উঠে তখন তা দুইটি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। আমরা আগেই জানি রকেটের দুইটি অংশ অর্থাৎ  একটি স্পেস ক্রাফট ও আরেকটি ইঞ্জিন। মহাকাশে উঠার পর সেই স্পেস ক্রাফট ও রকেটের ইঞ্জিন বা রকেটটি আলাদা হয়ে যায়। স্পেস ক্রাফটি তখন বিমানের মতো কন্ট্রোল করা যায়। কিন্তু পৃথিবীতে যখন এটি নামে তখন এতে প্রচন্ড ঘর্ষণের কারণে আগুন ধরে যায়। কিন্তু এতে স্পেস ক্রফটের কোন ক্ষতি হয় না। কারণ সেটি উপযোগী করেই বানানো হয়েছে।
    সকলকে ধন্যবাদ।
    ব্লগিং ও অনলাইন বিষয়ক নানা আইডিয়ার জন্য ভিজিট করুন বিডি অনলাইন এবং প্রো ব্লগিং টিপ্স

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    6 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
    • Comment
      Comment May 1, 2021 at 4:36 AM

      Very helpful content for science students.

    • fahim
      fahim May 1, 2021 at 3:18 PM

      God bless you

      • Md. Shihab Uddin Mahi
        Md. Shihab Uddin Mahi May 1, 2021 at 3:30 PM

        Thanks my dear.

    • Unknown
      Unknown May 12, 2021 at 11:04 AM

      Good

    • Comment
      Comment June 21, 2021 at 8:14 AM

      Vary helpful for science lovers

      • Md. Shihab Uddin Mahi
        Md. Shihab Uddin Mahi June 21, 2021 at 8:16 AM

        Thanks❤️Stay always with me.

    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন
    comment url