স্বাস্থ্য টিপস

 স্বাস্থ্য টিপস

স্বাস্থ্যই সম্পদ (Health is wealth) এ কথাটি আমরা কে না জানি? সুস্বাস্থ্য যে মহান আল্লাহ তায়ালার কত বড় নিয়ামত তা শুধুমাত্র যারা অসুস্থ্য হয় তারাই বুঝতে পারে। তাছাড়া হাসপাতালে গেলে দেখতে পারবেন যে সুস্বাস্থ্য একটি কত বড় পাওয়া আমাদের স্রষ্টার কাছ থেকে। সুপ্রিয় পাঠক, আজকের এই পোস্টে আমরা সুস্থ্য থাকার জন্য কয়েকটি স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে আলোচনা করবো। তো চলুন শুরু করা যাক।
স্বাস্থ্য টিপস।
 স্বাস্থ্য টিপস।

স্বাস্থ্য টিপস। স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সেরা কয়েকটি টিপস। সুস্বাস্থ্যের জন্য করণীয় বিষয় ও টিপস।

    মধু পান করা

    মধু পান করা মুসলমানদের জন্য সুন্নত। কারণ আমাদের নবি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মধু পান করতেন। স্বাস্থ্য টিপস এর কথা বলতে গেলে অবশ্যই মধুর কথা বলতেই হয়। মৌমাছি ও মধু নিয়ে আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনে সূরা নাহল রয়েছে। মৌমাছি ও মধু নিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করেছে এবং তারা এটাও প্রমাণ করেছে যে সুস্বাস্থ্যের জন্য মধুও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 
    যাহোক, নিম্নে খালি পেটে মধু পানের কয়েকটি উপকারিতা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
    • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
    • হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করা।
    • দাঁতকে পরিষ্কার ও শক্তিশালী রাখা।
    • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা।
    • স্বরণশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা।
    • রক্তে থাকা হিমোগ্লোবিনের পরিমান বাড়িয়ে দেয়।
    • গ্যাস্ট্রিক ও আলসারের ঝুঁকি কম থাকে।
    • দেরিতে বার্ধক্য হয়।
    • যৌনশক্তি বর্ধনে সহায়তা করে।
    • বাতের ব্যাথা উপশম করে।
    • ক্ষুধা বৃদ্ধি করে।
    • হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান করে।
    • শারীরিক দুর্বলতা ও শরীরে শক্তির ঘাটতি মেটায়।
    • শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। যার ফলে আমাদের শরীর থাকে সতেজ। 
    প্রিয় পাঠক, স্বাস্থ্য টিপস এ আমাকে আরো বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে লিখতে হবে। যেহুতু মধুর উপকারিতা কেবল স্বাস্থ্য টিপসের মূখ্য বিষয় নয়। মধু পানের এগুলো ছাড়া আরো অনেক উপকারিতা আছে। পরবর্তীতে ইনশাআল্লাহ এ নিয়ে আলাদা একটি পোস্ট লিখা হবে। আপনারা যদি এ নিয়ে আলাদা পোস্ট চান তবে কমেন্ট করতে পারেন নিম্নে থাকা কমেন্ট বক্সে।
     

    খালি পেটে পানি পান করা

    আমরা আমাদের দিনের শুরুটা করি মূলত রাতে ঘুমানোর পর। সাধারণত ঘুম থেকে উঠার পর আমাদের পেট খালি থাকে। যারা মুসলিম তারা প্রতিদিন সকালে ফজরের নামাজের সময় যখন ওযু করেন তখন পানি পান করতে পারেন। অনেকেই হয়তো করে থাকেন। খালি পেটে পানি পান করা অনেক গুরুত্বপুর্ণ স্বাস্থ্য টিপস। স্বাস্থ্য টিপসের কথা আসলে এটি অবশ্যই বলতে হয়। সকালে খালি পেটে পানি করা নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন। স্বাস্থ্য টিপসের এ পর্যায়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পানি পান করার উপকারিতা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
    • হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া।
    • রক্তের মধ্যে থাকা দূষিত বিভিন্ন পদার্থ অতি সহজে মূত্রের মাধ্যমে বের হতে পারে।
    • ত্বকের সৌন্দর্য বর্ধনে সহায়তা করে।
    • কিডনির সমস্যার ঝুঁকি কম থাকে।
    • দেহের কোষ বৃদ্ধি ও দেহ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
    • কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
    • মলাশয় পরিষ্কার থাকে।
    এগুলো ছাড়াও খালি পেটে পানি পান আমাদের শরীরের বিভিন্ন জৈবিক কাজে সহায়তা প্রদান করে। তাই আমাদের সকলের উচিত খালি পেটে পানি পান করা। পাশাপাশি অন্যান্য সময়েও বেশি করে পানি পান করার চেষ্টা করা। তবে অতিরিক্ত হয়। কেননা অতিরিক্ত সবকিছুই আমাদের জন্য ক্ষতিকর। আশা করি স্বাস্থ্য টিপসের এই গুরুত্বপূর্ণ টিপসটি মেনে চলার চেষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ।

    টাটকা ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি খাওয়া

    আমরা বাঙালি। কথায় আছে তো, মাছে-ভাতে বাঙালি। তাই বলে কী শুধু মাছ আর ভাত খেলেই হবে? না, এগুলোর পাশাপাশি আমাদেরকে টাটকা ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। স্বাস্থ্য টিপসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন টিপস এটি। আমরা সবুজ শাকসবজি মোটামোটিভাবে খেয়ে থাকি, কিন্তু টাটকা ফলমূলটা তেমন হয় না। কেননা আমার তো সন্দেহ, এদেশের শহরে কী টাটকা ফলমূল পাওয়া যায়? ফল পাওয়া যায়, তবে ব্যবসার জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা ফলমূলে ক্যামিক্যাল প্রয়োগ করে। যার কারণে বাজার থেকে কিনে আনা ফল যেন বিষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এ দিক দিয়ে গ্রাম এগিয়ে। কেননা গ্রামে মৌসুমী ফল পাওয়া যায় এবং তা টাটকা ও ফরমালিনমুক্ত। কিন্তু অনেক সময় আমরা মনের অজান্তেই নষ্ট করে ফেলি এতে থাকা ভিটামিন। বিশেষ করে ভিটামিন সি। কেননা আমরা অনেক সময় রান্নার উপর নির্ভর করি এবং সেখানে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বিভিন্ন ফল রান্না করে মনে করি, এর ঘাটতি তো মিটেই গেলো। আদৌ কিন্তু সেটি নয়। কেননা তাপ প্রয়োগে ভিটামিন সি নষ্ট হয়। তাই আমাদের রান্না করা নয়, বরং টাটকা ফলমুল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাছাড়া টাটকা ফলমূলে ভিটামিনের অন্যান্য উপাদান তথা ভিটামিন এ, বি, ই ইত্যাদি পাওয়া যায়। তাই বলা যায় স্বাস্থ্য টিপসে টাটকা ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনেক।

    নিয়মিত ব্যায়াম করা

    নিয়মিত ব্যায়াম করা যে কতটা গুরুত্বপুর্ণ তা বোঝানোর জন্য আমার নিজের সাথে ঘটা ঘটনাটাই উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপণ করি।
    এই করোনা ভাইরাস ও লকডাউনের সময় ঘর থেকে বের হওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ। আমি ২০১৮, ২০১৯ সারা বছরই বিকাল সময়ে ক্রিকেট খেলেছি এবং ২০২০ সালের প্রথম কয়েকমাসও বেশ ক্রিকেট খেলি। যার ফলে এই বছরগুলোতে আমি জ্বর বা অন্যান্য অসুস্থতার সম্মুখীন হয়েছি মাত্র ১ থেকে ২ বার। তবে তাও তেমনটা গুরুতর নয়। দুই একদিন একটা প্যারাসিটামল খাওয়ার ফলে সেরে গিয়েছে। কিন্তু ২০২০ সালের শেষ দিক থেকেে ২০২১ সাল পর্যন্ত আগের সময়ের চেয়ে আরো বেশি কয়েকবার অসুস্থ হয়েছি। এখন আমার শরীর এমন হয়ে গিয়েছে যে, খেলাধুলা অর্থাৎ ব্যায়াম যতদিন করি ততদিন সহজে অসুস্থ হই না। 
    কী আজব ঘটনা! তাই না? আমার কাছেও এমন লেগেছিলো। কিন্তু আমি শেষে বুঝতে পেরেছি যে কারণটা।
    যাহোক, প্রিয় পাঠক স্বাস্থ্য টিপসের এই উদাহরণটি থেকেই আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে, ব্যায়াম করাটা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
    ব্যায়ামের ফলে শরীরের ওজন ও ভারসাম্য ঠিক থাকে। রক্তচাপ ঠিক থাকে। শিশু-কিশোরদের প্রতিদিন অন্তত ১ ঘন্টা ব্যায়াম করা উচিত। এর পরিবর্তে খেলাধুলা বা শারীরিক পরিশ্রম করা যেতে পারে। আর একজন পূর্ণবয়ষ্ক লোকের দৈনিক ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা ব্যায়াম করা উচিত যদি সে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে চায়।

    পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া

    খাবার তো খাবারই! কীসের পুষ্টি আর মুষ্টি সমৃদ্ধ, একটা খেলেই তো হলো! আপনি যদি সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে চান ও স্বাস্থ্য টিপস ফলো করে তবে অবশ্যই আপনার নিয়ম করে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।  আমি সবার প্রথমে যে কথাটি বললাম, এটি কিন্তু মুলত গ্রামে বসবাসকারী লোকদেরই মুখের কথা। কিন্তু তারা নিজেরাও জানে না যা, তারা নিজেদের অজান্তেই পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছে এবং খুবই কম অসুখের সম্মুখীন হচ্ছে। কিন্তু শহরে যারা বসবাস করে, তারা জাংক ফুড খেয়েই তো কূল পায় না। মনে করে দামি খাবারই হচ্ছে পুষ্টিকর খাবার। আসলে কিন্তু তা নয়। তাই আমাদের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। কেননা এটি আমাদের দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধন করে। ডিম, মাছ, মাংস, দুধ ইত্যাদি খেতে হবে। চর্বিযুক্ত খাবার বর্জন করতে হবে। আর যেসকল মানুষ বেশি পরিশ্রমী বিশেষ করে যারা গ্রামের মানুষ তাদেরকে কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ বা শর্করা জাতীয় খাদ্য বেশি খেতে হবে। যেমনঃ ভাত, আলু, রুটি ইত্যাদি।
    তাই স্বাস্থ্য টিপসে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

    লবণ, চিনি ইত্যাদি পরিহার করা

    আমরা খাবারকে সুস্বাদু করার জন্য লবণ ব্যবহার করে থাকি। তবে অনেকে অতিরিক্ত লবণ ব্যবহার করে থাকেন যা মোটেও উচিত নয়। আবার অনেকে সবকিছুতে একটু বেশি মিষ্টির জন্য অতরিক্ত চিনি ব্যবহার করে থাকে। চিনি ও লবণ এই দুইটিকে বলা হয় সাদা বিষ বা White Poison। এগুলোর অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে আমাদের দেহের ক্ষতি সাধিত হয়। তাই আমাদের এগুলোকে পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন
    comment url